খুতবাতে মসরূর – ত্রয়োদশ খণ্ড: Khutbat-e-Masroor - Volume 13Ahmadiyya Muslim Jama'at, Bangladesh., Jul 1, 2018 - 765 pages পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা’লা বলেছেন, হে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের ডাকে সাড়া দাও, কারণ সে তোমাদেরকে জীবিত করার উদ্দেশ্যে ডাকে...। (সূরা আল আনফাল ৮: ২৫) এটিই এর ভাবার্থ। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ভবিষ্যদ্বাণী অনুসারে শেষ যুগে আবির্ভূত প্রতিশ্রুত ইমাম মাহদী ও মসীহ্ (আ.)-এর আহ্বানে সাড়াদানকারীরা উক্ত আয়াতমূলে এক আধ্যাত্মিক জীবন লাভ করে আর প্রতিষ্ঠিত হয় এক ঐশী জামা’ত, যার নাম আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত। হযরত ইমাম মাহদী ও মসীহ মওউদ (আ.)-এর পরলোক গমণের পর ‘খিলাফত আলা মিনহাজিন নবুয়্যত’ অনুযায়ী এই জামা’তে খিলাফত প্রতিষ্ঠিত হয়ে এর সচল ধারা স্থায়ীরূপ লাভ করেছে আর খলীফার ডাকে সাড়া দিয়ে এই জামা’ত নিরন্তর সজীবতার স্বাক্ষর রেখে চলছে। আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের দ্বিতীয় খলীফা হযরত মুসলেহ মওউদ (রা.) বলেছেন, আল্লাহ তা’লা যাকে খিলাফতের পদমর্যাদায় দাঁড় করান সমকালীন জ্ঞান ও প্রজ্ঞা দান করে তাকে তিনি আপন গুণে ঐশ্বর্যমণ্ডিতও করেন। (আল ফুরকান, মে ১৯৬৭) আল্লাহ তা’লার অশেষ অনুগ্রহে আমরা এবার প্রমবারের মত আমীরুল মু’মিনীন হযরত মির্যা মসরূর আহমদ খলীফাতুল মসীহ্ আল খামেস (আই.)-এর সদয় অনুমোদনক্রমে তাঁর প্রদত্ত ২০১৫ সালের জুমুআর খুতবাগুলোর অনুবাদ একত্রে গ্রথিত করে একটি পুস্তকাকারে প্রকাশের প্রয়াস পাচ্ছি, আলহামদুলিল্লাহ্! খলীফাতুল মসীহ্ আল খামেস (আই.)-এর খুতবাগুলো ধারাবাহিকভাবে কেন্দ্র থেকে পুস্তক আকারে রীতিমত প্রকাশিত হচ্ছে আর এর নামকরণ করা হয়েছে ‘খুতবাতে মসরূর’। সমসাময়িক খলীফা তাঁর জামা’তের জন্য বরং সকল মানুষের জন্য প্রতি সপ্তাহে জুমুআর খুতবার মাধ্যমে আধ্যাত্মি খাদ্য ও জীবন চলার পথের দিক নির্দেশনা তথা আমলে সালেহ্’র পথনির্দেশনা দিয়ে থাকেন। ২০১৫ সনের খুতবাগুলোর প্রতি গভীর দৃষ্টি দিলে আমরা দেখতে পাই হুযূর (আই.) আল্লাহ্ ও বান্দার প্রাপ্য আদায়, আমাদের ব্যক্তিগত ও সমিষ্টগত নৈতিক উৎকর্ষ সাধন এবং ব্যক্তিক, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও বৈশি^ক শান্তি ও নিরাপত্তার সঠিক পথ কুরআন, হাদীস, হযরত মসীহ্ (আ.)-এর বাণী, পূর্ববর্তী খলীফাগণের বক্তব্য ও সাহাবীদের জীবনচরিতের মাধ্যমে সুচারুরূপে আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। একইভাবে এই খুতবাগুলোর মাধ্যমে তিনি ইসলাম এবং আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সা.)-এর শ্রেষ্ঠত্ব ও মাহাত্ম্য বিশ্ববাসীর সামনের দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট করে তুলে ধরেছেন আর সাথে সাথে এটিও প্রমাণ করেছেন যে, বর্তমান যুগে যদি শান্তি ও নিরাপত্তার সন্ধান করতে হয়, মানুষে মানুষে যদি সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত করতে হয়, এ পৃথিবীকে যদি শান্তিধাম বানাতে হয় তবে প্রতিশ্রুত মসীহ্ ও ইমাম মাহদী (আ.)-এর আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইসলাম ও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ছায়া তলে আশ্রয় নেয়ার মাধ্যমেই তা সম্ভব, অন্যথায় নয়। এ খুতবাগুলোর মাধ্যমে হুযূর (আই.) আহমদীয়া জামা’তের ধর্ম বিশ্বাস, মুসলেহ্ মওউদ (রা.)-সংক্রান্ত ভবিষ্যদ্বাণীর পূর্ণতা, আর্থিক কুরবানীর গুরুত্ব, কল্যাণ ও প্রয়োজনীয়তা এবং একজন আহমদী হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের কাছে জামা’তের প্রত্যাশার কথাও অত্যন্ত সরল ও সুন্দর ভাষায় আমাদের সামনে উপস্থাপন করেছেন। কালের প্রেক্ষাপটে বর্তমানে আল্লাহ তা’লা আমাদেরকে হযরত মির্যা মসরূর আহমদ খলীফাতুল মসীহ্ আল খামেস (আই.)-এর আশিস বিতরণকারী স্নেহঘন ছায়ায় রেখেছেন, এজন্য আমরা আল্লাহ তা’লার সমীপে যতই কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি না কেন তা নেহায়েতই অল্প ও নগণ্য হবে। আমাদের প্রাণপ্রিয় হুযূর হযরত খলীফাতুল মসীহ্ আল খামেস (আই.) সমগ্র মানবজাতির জন্য দরদ রাখেন এবং মমতাপূর্ণ ভালোবাসায় আমাদের সিক্ত করেন। আমাদের দুঃখকষ্ট যাতে লাঘব হয়, জীবন ও সম্পদ সুরক্ষা পায় আর আমাদের জাগতিক উন্নতি যেন সাধিত হয়, এ উদ্দেশ্যে সর্বময় মঙ্গল যাচনা করে আল্লাহ্র সমীপে তিনি কাতরচিত্তে আমাদের জন্য দোয়া করে থাকেন। আমাদের আধ্যাত্মিক ফলপ্রসূ সজীবতার জন্য আমাদের প্রতি তিনি সর্বদা স্নেহদৃষ্টি রাখেন। নৈতিক ও আধ্যাত্মিক পরিচর্যার নিমিত্তে তিনি আমাদেরকে আদেশ, নিষেধ ও মূল্যবান উপদেশ দিয়ে থাকেন। বিশেষ করে, প্রতি জুমুআয় সযত্নে বিষয়বস্তু নির্ধারণ করে মাতৃসুলভ মমতায় তিনি খুতবা দিয়ে থাকেন, যা স্যাটেলাইট টেলিভিশন এম.টি.এ-তে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। আমাদের প্রত্যেকের উচিত তা দেখা ও শোনার ক্ষেত্রে নিয়মিত হওয়া। ধর্মীয় সাহিত্যের আঙ্গিকে হুযূর (আই.) প্রদত্ত খুতবাগুলো এক অমূল্য সম্পদ। অতএব, জামা’তের পত্রিকা ও সাময়িকীতে মুদ্রিতাকারে প্রকাশিত হুযূরের খুতবাগুলো পাঠে আমাদের সবিশেষ মনোযোগী হওয়া উচিত, যাতে আমরা এটিকে নিয়মিত পাঠ্যাভ্যাসে পরিণত করে এ থেকে লাভবান হতে পারি। |